সেঞ্চুরির পথে আলু!

পেঁয়াজের পর এবার আলুর বাজারে দেখা দিয়েছে অস্থিরতা। অসৎ ব্যবসায়ীদের অধিক মুনাফা প্রবণতায় বাজারে হঠাৎ করেই নিত্য প্রয়োজনীয় এই পণ্যের দাম চলে যাচ্ছে ক্রেতার নাগালের বাইরে। বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্য মূল্য তালিকা অনুযায়ী বর্তমান বাজারে আলুর দাম প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। যা একমাস আগেও ছিল ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে আলুর দাম বেড়েছে ৩১ দশমিক ৫৮ শতাংশ। অথচ এক বছর আগে বাজারে এই আলুর দাম ছিল কেজি প্রতি ১৬ থেকে ২২ টাকা। সেই হিসেব অনুযায়ী ১ বছরের ব্যবধানে আলুর দাম বেড়েছে ২২৮ দশমিক ৯৫ শতাংশ।
কিন্তু,এত কিছুর পরেও বাজারে টিসিবি নির্ধারিত মূল্যে পাওয়া যাচ্ছে না আলু। কারওয়ান বাজার ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাজারে নতুন ও পুরোনো আলুর কেজি পড়ছে ৮০ টাকা। পুরোনো আলুর দাম কোথাও কোথাও একটু কমে ৭০ টাকা কেজিতে মিলছে। আবার নতুন আলু আকারে বেশি ছোট হলে সেটির দামও একটু কম রাখা হয়। অন্যদিকে, স্থানভেদে মহল্লার ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোতে আলুর দাম হাঁকা হচ্ছে ৯০ টাকা পর্যন্ত কেজি। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহ থেকে সবরকম আলুর দাম কেজিতে বেড়েছে অন্তত ১০ টাকা। কারওয়ান বাজারের সবচেয়ে বড় আলুর আড়তদার মো. সবুজ জানান, তার দোকান বিক্রমপুর ভাণ্ডারে প্রতিদিন ২০ টন আলু পাইকারি বিক্রি হয়।
তিনি বলেন, আলুর দাম হঠাৎ বেড়ে গেছে। সোমবার পাইকারি ৬৮ টাকা কেজি দরে পুরোনো আলু বিক্রি করেছি। গত সপ্তাহে বিক্রি করেছি ৪৭-৪৮ টাকায়। আলুর সংকট দেখা দেওয়ায় দাম বেড়েছে। মুন্সীগঞ্জ, রাজশাহী, রংপুরে আলুর খুব সংকট চলছে, পাওয়া যাচ্ছে না। অতি বৃষ্টি ও ঢলে দুই দফায় আলুর বীজ নষ্ট হওয়ায় এ সমস্যা তৈরি হয়েছে। বাজার–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ভারত থেকে আলু আমদানি বন্ধ হওয়ার কারণেও বাজার চড়ে গেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে এ সময়ে এবারই সর্বোচ্চ দামে আলু বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া নভেম্বরেও আলুর কেজি ৫০ টাকার আশপাশে ছিল। এবার অন্যান্য সবজির দামও বেশি। এটিও আলুর বাড়তি দামের আরেকটি কারণ।
আবদুর রহমান নামে এক ক্রেতা বাংলানিউজকে বলেন, আমি নিজে মূলত পুরোনো আলুই খাই। নতুনটা ভালো লাগে না। তিন দিন আগেও পুরোনো আলু কিনেছি ৫৫ টাকা কেজি দরে। এখন সেই আলুই ৮০ টাকা চাচ্ছে। আর নতুন আলু তিন দিন আগে দেখেছিলাম ৫৫ টাকা কেজি। এখন ৭০ টাকার নিচে নেই।
তারেক নামের এক ক্রেতা বাংলানিউজকে বলেন, পেঁয়াজ, আলুসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যেরই দাম বেশি। আমরা নিরুপায়, একদম ঠেকে গেছি। বাজার ব্যবস্থা সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। আর সেটার ভুক্তভোগী হচ্ছি আমরা।

বিজ্ঞাপন