তাহিরপুরে আশংকায় ২০ হাজার কৃষক: ডিসির কাছে অভিযোগ

ছবি-প্রতিনিধি

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজলার একটি গুরুত্বপূর্ণ হাওর হচ্ছে বলদার হাওর। জানা গেছে, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও এই হাওরের কয়েক লাখ একর জমিতে চাষ করা হয়েছে বোরো ধান। কিন্তু এই হাওরে ৩টি পি.আই.সির মাধ্যমে যে বেরী বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে তা সঠিক ভাবে না হওয়ার কারণে ফসলহানির আশংকায় রয়েছে প্রায় ২০হাজার কৃষক। এঘটনার প্রেক্ষিতে ভুক্তভোগী ৩১জন কৃষক জেলা প্রশাসকের নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। আর এই অভিযোগের অনুলিপি দেওয়া হয়েছে উপজেলা চেয়ারম্যান, নির্বাহী কর্মকর্র্তা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) সহ আরো অনেককেই।
দায়েরকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে- ২০২২-২৩ইং অর্থ বছরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিনে সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার মাতিয়ান হাওরের বর্ধিতাংশ বলদার হাওর উপ-প্রকল্পের ৩টি পি.আই.সির (৭৬, ৭৭ ও ৭৮নং) মাধ্যমে ৭০লাখ ৪৯হাজার ১শত ১৭টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয়। আর এই অর্থ লুটপাটের অসৎ উদ্দেশ্যে উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সদস্য দ্বীন ইসলাম রাজু নিজে ৭৮নং পি.আই.সিতে সভাপতি হন। এছাড়াও ৭৭নং পি.আই.সিতে ইউপি সদস্য দ্বীন ইসলাম রাজু তার আপন ছোট ভাই রমজান আলীকে সদস্য সচিব ও ৭৬নং পি.আই.সিতে তার ভগ্নিপতি সাজিদ মিয়া খন্দকারকে সভাপতি ও তার স্ত্রীর বড় ভাই আরিজ মিয়াকে সদস্য সচিব করাসহ তার আত্মীয়-স্বজন দিয়ে ৩টি পি.আই.সি কমিটি গঠন করেন। এবং কোন রকম জোড়া তালি দিয়ে ২টি পি.আই.সির নামমাত্র কাজ করেন। আর একটি পি.আই.সির বাঁধের ওপর মাটি না ফেলেই ২টি বিলের মাধ্যমে ইতিমধ্যে ২৬লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে বলে অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া গত ২৮ ফেব্রæয়ারীর মধ্যে বেরী বাঁধের নির্মাণ কাজ শতভাগ সম্পন্ন করার কথা থাকলেও এখনও পর্যন্ত শেষ হয়নি।
এব্যাপারে বলদার হাওরের কৃষক নেকবর মিয়া, আলামিন, আবু বক্কর, সাজিদ মিয়া, শাজাহান ও মোশারফ হোসেনসহ আরো অনেকেই বলেন- গত ১৯মার্চ (রবিবার) জেলা প্রশাসক বরাবরে আমরা ভোক্তভোগী ৩১জন কৃষক হাওরে বেরী বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম ও দূর্নীতির বিষয় নিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। কিন্তু ৬দিন পেরিয়ে গেলেও এব্যাপারে হয়নি কোন তদন্ত, নেওয়া হয়নি আইনগত কোন পদক্ষেপ। এমতাবস্থায় অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলের পানি এসে বলদার হাওরের বোরো ধান তলিয়ে যাওয়ার আশংকায় রয়েছে প্রায় ২০হাজার কৃষক। তাই সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সহযোগীতা জরুরী প্রয়োজন।
কৃষকদের অভিযোগের ব্যাপারে ৭৮ নং পি.আই.সির সভাপতি ইউপি সদস্য দ্বীন ইসলাম রাজু বলেন- পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক বেরী বাঁধ নির্মাণের জন্য আমাকে যে কাজ দেওয়া হয়েছে তা সঠিক ভাবে সম্পন্ন করেছি। আমার নির্মিত বাঁধে শুধু বস্তা দেওয়া বাকি ছিল সেটাও দেওয়া হয়ে যাবে। বাঁধ নির্মাণে আমি কোন অনিয়ম বা দূর্নীতি করিনি। পূর্ব বিরোধের জের ধরে একটি মহল আমার ক্ষতি করার চেষ্টা করছে।   
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুপ্রভাত চাকমা বলেন- বাঁধ ও পি.আই.সির কাজের অনিয়ম নিয়ে কৃষকদের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের নিকট যে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছিল তার তদন্ত চলছে। হাওর রক্ষা বাঁধের সাথে সংশ্লিস্ট সবাই এব্যাপারে গুরুত্ব সহকারে ভূমিকা পালন করছে। আশা করছি কৃষকদের কোন ক্ষতি হবেনা।
 

বিজ্ঞাপন