প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার কাজিপুরে নৌ-এ্যামবুলেন্স রোগী পরিবহন না করেই অকেজো

সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার যমুনা নদীর চরাঞ্চলের ৬ টি ইউনিয়নের জনসাধারণের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে ২ টি নৌ-এ্যামবুলেন্স বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে পাওয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে থাকা এ দুটি বাহনের একটি ইতোমধ্যে পুরোপুরি অকেজো হয়ে পড়েছে, অপরটি ভাঙ্গাচোরা অবস্থায় বেহাল পরে আছে মেঘাই নৌ-ঘাটে, কেউ জানেনা কাজিপুরে নৌ-এ্যাম্বুলেন্স আছে। স্থানীয়দের দাবী এ সব নৌ-এ্যামবুলেন্স কখনও জনসাধারণের সেবায় আসেনি। তেল বরাদ্দ না থাকায় এমন পরিস্থিতি বলছেন দায়িত্বশীল কতৃপক্ষ। 
সরেজমিনে কাজিপুর সদর ইউনিয়নের খুদবান্ধি ঘাটের পাশে একটি বাড়ির মজা পুকুরে প্রথম এ্যাম্বুলেন্সটি পরিত্যাক্ত ও অরক্ষিত অবস্থায় পাওয়া যায়। মেঘাই নৌ-ঘাটে পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা ২য় এ্যামবুলেন্সটির ভিতরের সিট, সুইজ বোর্ড, ডেকোরেশন, লাইট, ফ্যানসহ সব কিছু ভাঙ্গা দেখা গেছে। স্থানীয় যুবক মাসুদ, হাবিব ও ঘাট শ্রমিক জব্বার জানান গত ৭ বছরে এ্যামবুলেন্সটিতে কখনও রোগী পরিবহন করতে দেখেননি তারা। 
 
প্রথম এ্যামবুলেন্স ঠিক কবে কাজিপুরের আনা হয়েছিলো তার কোনো তথ্য না থাকলেও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, ২য় টি প্রায় ৭ বছর আগে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে পাওয়া। নৌ-এ্যামবুলেন্সের জন্য আউটসোর্সিং থেকে একজন চালকও রয়েছেন যার কাজ না থাকলেও সকল সুবিধা তিনি পেয়ে থাকেন। 
 
 
কাজিপুরে নৌ-এ্যামবুলেন্স আছে জানা ছিলো না জানিয়ে রেহাইশুড়িবেড় গ্ৰামের ফাতহাতুজ্জাহান জানান, দুর্গম চরাঞ্চলের বসবাসরত মানুষের জন্য নৌ-এ্যামবুলেন্স খুবই জরুরি, প্রয়োজনে ভাড়া নৌকা একমাত্র ভরসা, সেক্ষেত্রে শিশু, বয়স্ক ও প্রসূতিদের ব্যপক বিরম্বনায় পড়তে হয়। চরগিরিশ ইউনিয়নের ভেটুয়া গ্ৰামের সাইদুল ইসলাম জানান, চিকিৎসার জন্য জেলা সদরে যেতে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়, দ্রুত গতি সম্পন্ন আধুনিক নৌ-এ্যামবুলেন্স চরাঞ্চলের জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ। নিশ্চিন্তপুর ইউপি চেয়ারম্যান খাইরুল কবির বলেন, খেয়া নৌকায় পারাপারে সুস্থ্য মানুষ অনেক সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন, রোগীদের দুর্ভোগের শেষ নেই, একটি ভালো মানের নৌ-এ্যামবুলেন্স থাকলে সঠিক সময়ে উন্নত স্বাস্থ্য সেবার পাশাপাশি অর্থ সাশ্রয় হবে। 
 
কাজিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও প:প: কর্মকর্তা মোমেনা পারভিন পারুল বলেন, প্রথম নৌ-এ্যামবুলেন্সটি অকেজো হয়ে পড়েছে, ২য় টি সচল আছে, গত ৭/৮ মাস আগে সংস্কার করা হয়েছে, সরবরাহকৃত নৌ-এ্যামবুলেন্সটি ধীরগতি সম্পন্ন হওয়ায় জনপ্রিয়তা পায়নি, এছাড়াও নৌ-এ্যামবুলেন্সের জন্য তেল অথবা সমপরিমাণ অর্থ সরকারিভাবে বরাদ্দ না থাকায় সেবা দিতে পাড়ছেনা, বিষয়টি লিখিতভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। 
 
উল্লেখ্য, কাজিপুর উপজেলার ১২ টি ইউনিয়নে মধ্যে ৬ টি যমুনা নদীর চরাঞ্চলে অবস্থিত, লোকসংখ্যা বিবেচনায় অর্ধেক মানুষ চরে বসবাস করে, চরাঞ্চলে দুটি ১০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল ও প্রতি ইউনিয়নে একটি করে কমিউনিটি ক্লিনিক থাকলেও অপ্রতুল লোকবল এবং আধুনিক সুযোগ-সুবিধা না থাকায় সিরাজগঞ্জ জেলা সদরসহ বিভিন্ন স্থানে স্বাস্থ্য সেবা প্রত্যাশীরা যাতায়াত করে থাকেন।
বিজ্ঞাপন